নিউজ সোনারগাঁ২৪ডটকমঃ হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে প্রায় ১০,০০০ উট মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসী নেতারা। এই উটগুলো ১৯ শতকে সর্বপ্রথম গৃহপালিত পশু হিসেবে ভারত এবং আফগানিস্তান থেকে অস্ট্রেলিয়ায় আনা হয়েছিল। পরিবহন, নির্মাণ এবং অন্যান্য ভারবাহী কাজে এদের ব্যবহার করা হত। কিন্তু কালের পরিক্রমায় এই পশুগুলো গৃহপালিত অবস্থা থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীন জীবন যাপন শুরু করে। ফলে উটের সংখ্যা প্রতিবছর বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। উটের কারণে নানা রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
অস্ট্রেলিয়ায় এখন শুকনো মৌসুম চলছে। তার উপর কয়েক মাস ধরে আগুনের ভয়াবহ ছোবলের ফলে খরা আরো বেড়েছে। উট প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূর থেকে পানির গন্ধ পায়। সুপেয় পানির অভাবে উটের পাল মানুষের বাড়িতে ঢুকে পড়ছে, পানির কল, ট্যাংক এমনকি এয়ার কন্ডিশনার থেকেও পানি পানের চেষ্টা করছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে উটের উপর কালিং অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বুধবার থেকে অভিজ্ঞদের দ্বারা হেলিকপ্টার থেকে এই কালিং অপারেশন শুরু হবে, চলবে পুরো সপ্তাহ। এভাবে না মারা হলে প্রতি আট থেকে দশ বছরে উটেদের সংখ্যা দ্বিগুণ হতে থাকবে। এর জন্য বাড়তি চারণভূমি প্রয়োজন যা দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার ভূমির উপরে অতিরিক্ত চাপ ফেলবে। স্থানীর জনগণের ক্ষতির আশংকাতো রয়েছেই, এছাড়াও গ্রিন হাউজ গ্যাস বৃদ্ধিতেও উটের ভূমিকা রয়েছে। প্রতি বছর যে পরিমানে মিথেন গ্যাস তারা নিঃশ্বাসের সাথে নিঃসরণ করে তা প্রায় এক টন কার্বন ডাই অক্সাইডের সমান, যা কিনা ৪০০,০০০ বাড়তি গাড়ির সমতুল্য।
দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার পানি ও পরিবেশ বিভাগের মতে, এই সময়ে উটের পাল পানির খোঁজে একসাথে জড়ো হয়েছে। এখনি অপারেশন চালানোর উপযুক্ত সময়। নয়ত বেশিরভাগ সময়ে তারা ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে মরুভূমিতে ঘুরে বেড়ায়।
স্থানীয় উটের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য এই কালিং অপারেশন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে সমালোচিত হয়েছে। পশুপ্রেমী অনেকে গুলি করে প্রাণীর উপর হত্যা চালানোর বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। যদিও, পানি ও পরিবেশ বিভাগের তত্ত্বাবধানে লোকালয় থেকে দূরে অপরেশনটি এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। অপারেশন শেষে উটের মৃতদেহগুলো শুকিয়ে যাওয়ার পর পুড়িয়ে অথবা মাটিতে পুতে ফেলা হবে হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।